বিস্তারিত
  • সারাদেশে আতঙ্ক ৮ ফেব্রুয়ারী কি ঘটতে য‍াচ্ছে?


    স্টাফ রিপোর্টার || 26 January, 2018, 11:51 PM || জাতীয়


    ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়

    আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ৬ জনের রায় ঘোষণা হবে। আইন অনুযায়ী বিচারক যদি মনে করেন অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে, তাহলে এ মামলায় খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাণ্ড দেয়া হতে পারে। কম দণ্ড দেয়ারও ক্ষমতা আছে বিচারকের। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হলে খালাস পাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

    তবে, বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে ‘অন্তঃসারশূন্য’ এই মামলাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য আর মামলার গতিবিধিতে বিএনপি ধরেই নিয়েছে, সরকার- খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠাতে চায়। এ জন্য মামলার কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে আসছে ক্ষমতাসীন দল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও সে কথা আদালতে মামলা চলাকালে একাধিকবার বলেছেন। এদিকে, মামলার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে রায় ঘোষণার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করার পর পরই সরকার ও বিএনপি শিবিরে টেনশন, উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সেই সাথে উভয় পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি পাল্টা হুঁশিয়ারি আসতে শুরু করেছে। এতে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও কৌতূহল বাড়ছে। একইসাথে আতঙ্কও বিরাজ করছে চারদিকে।

    রায় নিয়ে বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। কেউ বিশৃঙ্খলা বা ধংসাত্মক কার্যকলাপের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

    শুক্রবার রাজধানীতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান। সেক্ষেত্রে মামলার রায় হতেই পারে। তবে রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

    আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক আছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘অপরাধ যেই করুক তার শাস্তি হয়েছে। আইনের আওতায় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আর পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে তাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই নেবেন।’

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আগাম হুঁশিয়ারি সংগত নয়: ফখরুল

    বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার আগামী নির্বাচন করতে চায় বিএনপিকে বাদ দিয়ে। সে জন্যই নজিরবিহীন তাড়াহুড়ার মধ্যে দ্রুততার সঙ্গে এই মামলা শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বহু আগেই রায় দিয়ে দিয়েছেন।

    আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর টিকাটুলির কে এম দাশ লেনে প্রয়াত ঔপন্যাসিক শওকত আলীর বাসায় পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

    রায় নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে—স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, রায় ঘোষণার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিমূলক আগাম বক্তব্য সংগত নয়। এ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, তাঁরা কী চিন্তা করছেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো রায় পাইনি। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করিনি। তাহলে কোথায় যাবেন?’ মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন আগে থেকেই সরকারের লোকজন এই মামলা নিয়ে আগাম বক্তব্য দেওয়া শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বহু আগেই রায় দিয়ে দিয়েছেন। নিশ্চয় মনে আছে, অনেক আগেই তিনি বলে দিয়েছিলেন এতিমের টাকার ব্যাপারে। অন্য মন্ত্রীরা বলছেন। তাঁরা প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি ক্ষণ তাঁরা হুমকি দিয়েছেন, শক্তি প্রয়োগ করেছেন, বলপ্রয়োগ করেছেন।’

    বিএনপির মহাসচিব বলেন, কয়েক দিন আগে এরশাদ সাহেব রংপুরে বলেছেন, আর মাত্র কয়েক দিন, তারপর জেলে যেতে হবে। তাঁর দলের একজন প্রতিমন্ত্রীও একই কথা বলেছেন। রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের এ ধরনের কথায় প্রমাণিত হয়, রায় পূর্বনির্ধারিত, পরিকল্পিত। এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রয়াত ঔপন্যাসিক শওকত আলীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তাঁর বড় ছেলে আসিফ শওকত কল্লোল, স্ত্রী ফারজানা আফরোজসহ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন।



সর্বশেষ খবর


নিউজ খুঁজুন
আর্কাইভ
ফেইসবুক পেইজ