বিস্তারিত
  • বিশ্বনাথের ডা: শানুর আলী মামুন বাংলাদেশের প্রথম এলার্জি এক্সপার্ট


    তজম্মুল আলী রাজু :: || 20 February, 2018, 6:17 PM || বিশ্বনাথ, স্বাস্থ্য


    ডা: মো. শানুর আলী মামুন বাংলাদেশের প্রথম এলার্জি এক্সপার্ট। তিনি ইংল্যান্ডের সুনামধন্য মেডিকেল ইনস্টিটিট  ‘স্কুল অব মেডিসিন সাউথাম্পটন’ থেকে এলার্জিতে মার্ষ্ঠার ডিগ্রী অর্জন করেন ২০১৪ সালে। ২০১৫ সালে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি সাউথাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়’র ভাইস-চ্যান্সেলরের কাছ থেকে গ্যাজুয়েশন এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
    ‘স্কুল অব মেডিসিন সাউথাম্পটন’ ওয়ালর্ড এলার্জি অরগানাইজেশন কর্তৃক ‘সেন্টার অব এক্সেলেন্ট’ হিসেবে স্বীকৃত। তিনি ওয়াল্ড এলার্জি অরগানাইজেশন এর একজন জুনিয়র মেম্বার এবং বৃটিশ সোসাইটি ফর এলার্জি এবং ক্লিনিক্যাল ইম্বিউনোলজি (বিএসএসিই) এর একজন মেম্বার। ডা: মো. শানুর আলী মামুন ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্গালোর থেকে এডভান্সড কোর্স অন ডায়াগনোসিস অব এলার্জি এন্ড ইম্বিউনোথেরাপির ওপর ৩ মাসের কোর্স সম্পন্ন করেন। যা কার্নাটাকা মেডিকেল কাউন্সিল ইন্ডিয়া কর্তৃক স্বীকৃত । এলার্জি এজমা ও ইএনটি ক্লিনিক ও ভিদেহী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স এন্ড রিচার্স সেন্টারের কলাবরেশনে কোরসটি আয়োজন করা হয়। ডা: মো. শানুর আলী মামুন এলার্জি ডায়াগনস্টিক, স্কিন প্রিক টেষ্টিং এর ওপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেনটেশন প্রদান করেন এবং তাঁর আরটিকেলটি তাদের বুলেটিনে প্রকাশ করা হয়।


    ডাক্তার মো. শানুর আলী মামুন বলেন, এলার্জি হলো এক ধরনের অনাকাংকিত প্রতিক্রিয়া যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ বাহিনী ও আমাদের আশে পাশের জিনিষের সাথে থাকা যেমন: ধুলাবালি, ফুলের রেনু, কিছু কিছু খাবার, ঠান্ডা, গরম ইত্যাদির মধ্য ঘটে থাকে। এসব কারণে মানুষের যে সমস্যা হতে পারে সেগুলো হচ্ছে সর্দি, হাপানী, চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ অনেক রোগ বা উপসরগ।
    ওয়ালর্ড এলার্জি অরগানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী পৃথিবীর ৩০-৪০ শতাংশ জনগণ জীবনের কোন না কোন এক সময় কোন না কোন এলার্জিতে ভোগে থাকেন। আর বাংলাদেশে এর সংখ্যা সে অনুযায়ী প্রায় ৫-৬ কোটি। তবে চিন্তার বিষয় শিশুরা এর সমস্যায় সবচেয়ে বেশী ভুক্তভোগী এবং যা শতকরা পঞ্চাশ ভাগ পযন্ত।
    গবেষনায় দেখা যায়, সে সকল শিশুরা তাদের জন্মের পর পরই এলার্জি জনিত রোগ যেমন : পাতলা পায়খানা, সর্দি কাশি, চর্মরোগ, হাপাঁনিসহ বিভিন্ন রোগে ভোগে থাকেন, তাদের প্রায় ৮০ ভাগ পরযন্ত বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাঁপানিতে আক্রান্ত হতেও পারেন, যদি যথাসময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হন।
    ডা: মো. শানুর আলী মামুন বলেন, এলার্জি একটা জটিল সমস্যা যা জেনেটিক এবং এনভায়রনমেন্ট রিয়েকশনের ফসল। কখনও কখনও এতোই ভয়ানক যে, কেউ যদি টাইপ-১ এলার্জিতে আক্তান্ত হয়ে এনাফাইলেকটিক রিয়েকশনের চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হন তাহলে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে একজন ভোক্তভোগী মৃত্যু বরণ করতে পারেন, যা বাংলাদেশের অনেক পল্লীতে জিনের আছর বা হার্ট এটার্ক বলে চালিয়ে দেয়ার গল্প শুনা যায়। অথচ উন্নত বিশ্ব এমনকি পাশের দেশ ইন্ডিয়াতেও স্কিন প্রিক টেষ্ট করে টাইপ-১ এলার্জি রোগীদেরকে জীবন রক্ষাকারী এড্রেনালিন অটো ইনজেকশন সাথে দেয়া হয়। যাতে রোগী ইমারজেন্সী প্রয়োজনে নিজে নিজে ব্যবহার করতে পারেন।


    অনেক নবজাতক ডাক্তারের কাছে আসেন বমি, ও পাতলা পায়খানা নিয়ে এদের কিন্তু ৯০ ভাগের পেছনের কারণ ফুড এলার্জিও হতে পারে। শুধু তাই নয় অনেক রোগী আছেন যারা সব সময় সর্দিতে ভোগছেন এদের কেউ কেউ নাকে অপারেশনও করাচ্ছেন অথচ সর্দির পেছনে যখন এলার্জি মূল কারণ তখন অপারেশনে কোন ফলাফল পাওয়া যাবে না। উন্নত বিশ্বে এমনকি ইন্ডিয়াতেও হাঁপানিও এলার্জিক রাইনাসিসের জন্য প্রায় নিরাময়যোগ্য ঔষধ, এলারজেন ইউমোনোথেরাপী ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বাংলাদেশের রোগীরা এই সুবিধা থেকে আজও প্রায় বঞ্চিত। এ ধরনের চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশের হাজার হাজার রোগী বিদেশে এমনকি পাশের দেশ ইন্ডিয়াতে যাচ্ছেন। ইন্ডিয়ার ব্যাঙ্গালোর অ্যালারজি বিশেষজ্ঞ ডা: মাধবীর সাথে স্বাক্ষাতকালে তিনি বলেন ‘‘আমি প্রতিদিন দুইজন বাংলাদেশী রোগীকে নিয়মিত স্কিন পিক টেস্ট করে অ্যালারজি ডায়াগনোসিস করছি। তিনি বলেন আপনি ঢাকা বসলে আমি এই রোগীগুলাকে আপনার কাছেই পাঠাব এতে তাদের সময় ও অরথের সাশ্রয় হবে”।
    ডা: শানুর আলী মামুন বলেন, বাংলাদেশে এলার্জি চিকিৎসায় আপ টু ডেট ব্যবস্থা থাকলে বাংলাদেশের হাজার হাজার রোগীদেরকে বিদেশে যেতে হবে না। এতে করে বাংলাদেশ সরকারের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বাংলাদেশের রোগীর সেবা ও এলার্জি সচেতনত সৃষ্ঠির লক্ষো প্রতি মাসের প্রথম ও ৩য় শুক্র ও শনিবার ঢাকা এলার্জি ও এজমা সেন্টার, গ্রীণ রোড, (গ্রীণ সুপার মাকের্ট ৩য় তলা)  এবং রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০-১টা নিজ উপজেলা বিশ্বনাথে, “বিশ্বনাথ এলার্জি ও এজমা সেন্টার” রামসুন্দর হাই স্কুল মাকের্ট এবং বিকেল ৫টা ৮টা সিলেটের রকাবীবাজারস্থ ইবনে সিনা ডায়াগনষ্ঠিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখছেন।



সর্বশেষ খবর


নিউজ খুঁজুন
আর্কাইভ
ফেইসবুক পেইজ