বিস্তারিত
  • বিশ্বনাথে অধ্যক্ষকে মাদ্রাসায় প্রবেশে বাঁধা


    বিশ্বনাথ বিডি ২৪ || 05 September, 2023, 8:05 PM || বিশ্বনাথ


    বিশ্বনাথবিডি২৪:: বিশ্বনাথের তেলিকোনা এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইনকে সম্প্রতি বরখাস্ত করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। বরখাস্তের পর গত রোববার ওই অধ্যক্ষ জোরপূর্বক মাদ্রাসায় প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেন কর্তৃপক্ষ।
    এনিয়ে দু’পক্ষে বাতবিতন্ডা শুরু হলে থানা পুলশের এসআই দিপঙ্কর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। আর এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটনার পর থেকে এডহক কমিটির সাবেক সভাপতি নিজামুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা হরমুজ আলী এবং বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় উভয়পক্ষে সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে।

    মাদ্রাসা শিক্ষকরা জানান, ২০২০ সালের ১লা ফেব্রæয়ারি মাদ্রাসার গভর্নিংবডির সভাপতি মারা যাবার পর মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের একাধিক পত্রের নির্দেশ সত্বেও অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন কমিটির সভাপতির শুন্য পদ পুরন করেননি। এরপর ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি বোর্ড থেকে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয় কিন্তু বোর্ডের একাধিক নির্দেশ অমান্য করে দীর্ঘ ১১মাসেও তিনি কমিটি করেননি।
    এরপর ২০২২সালের ১৫ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি গঠন করে কমিটি অনুমোদনের প্রস্তাব বোর্ডে প্রেরণ করতে ব্যর্থ হন।
    এরপর ২৮ ডিসেম্বর মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বিশ^নাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান অধ্যক্ষকে বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সহকারী অধ্যাপক মুখলিছুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রদানসহ এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর তিনি নিজামুল ইসলামকে সভাপতি, অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইনকে সদস্য-সচিব, নুর উদ্দনকে অভিভাবক সদস্য এবং এটিএম নুর উদ্দিনকে শিক্ষক প্রতিনিধি করে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করে বোর্ডে প্রেরণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে চলতি ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
    অন্যদিকে অধ্যক্ষ তার অপসারনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে গত ৭ জুলাই পর্যন্ত ৬মাসের স্থগিতাদেশ পেয়ে স্বপদে বহাল থাকেন। ফলে বিধি মোতাবেক এডহক কমিটি চলতি ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ কমিটির সিদ্ধান্ত মতে অধ্যক্ষকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত ৪মাসের ছুঠি প্রদান করা হয়। এসময় মাদ্রাসার নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেওয়া হয় মাওলানা হরমুজ আলীকে।
    এদিকে অধ্যক্ষকে ছুঠিতে পাঠিয়ে বিধিমোতাকে পূর্নাঙ্গ কমিটি নির্বাচনপূর্বক বোর্ডে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়। একই সময়ে (মার্চে) একটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তপূর্বক সত্যতা প্রমানিত হলে মাদ্রাসা অধিদপ্তর ও শিক্ষাবোর্ড এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কয়েকটি তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে চলতি ২০২৩সালের ৬জুলাই এডহক কমিটি অধ্যক্ষকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে এবং এমপিও স্থগিতের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করে।
    বর্তমানে বিষয়টি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তের জন্য আপেক্ষমান রয়েছে। ঠিক সে সময় গত ২০ জুলাই মেয়াদ শেষ হওয়া একটি আদেশের কপি নিয়ে গত রোববার মাদ্রাসায় গিয়ে হাজির হন অধ্যক্ষ আবু তহির মোহাম্মদ হোসাইন।
    মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, হাইকোর্টের আদেশ ও শিক্ষাবোর্ডের আদেশ কপি নিয়ে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে প্রবেশ করতে চাইলে তারা অন্যায়ভাবে বাঁধা দেন। শিক্ষাবোর্ডের আইন অনুযায়ী মাদ্রাসার এডহক কমিটি কোনভাবেই তাকে বরখাস্ত করতে পারেনা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

    মাদ্রাসার এডহক কমিটির সাবেক সভাপতি নিজামুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হরমুজ আলী বলেন, মাদ্রাসার ১৪ লাখ টাকার হিসেব না দেওয়ায় অধ্যক্ষকে সম্প্রতি বরখাস্ত করা হয়। রোববার মেয়াদোত্তীর্ন আদেশ কপি নিয়ে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে ঢুকতে চাইলে তাকে প্রবেশ করতে বাঁধা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
    বিশ^নাথ থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। উভয় পক্ষের কাগজপত্রাদি দেখে পরবর্তি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



সর্বশেষ খবর


নিউজ খুঁজুন
আর্কাইভ
ফেইসবুক পেইজ