বিস্তারিত
  • অলংকারী ইউ/পি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী ও হয়রানীর অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে প্রবাসীর আবেদন


    বিশ্বনাথ বিডি ২৪ || 09 July, 2018, 7:34 PM || আলংকারী, বিশ্বনাথ


    হয়রানী ও চাঁদাবাজী থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের মিরগাঁও গ্রামের মৃত ইন্তাজ আলীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী আইনজীবী আব্দুন নুর।
    প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরিত অভিযোগে আব্দুন নুর উল্লেখ করেন, তিনি বিগত ৪০ বছর যাবৎ যুক্তরাজ্যের লোটন শহরে স্বপরিবারে বসবাস করে আসছেন। সেখানে তিনি আইন পেশার সাথে জড়িত ও জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জন্মভূমির টানে নিজের মানসিক প্রশান্তি ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে সাক্ষাতসহ বিভিন্ন কাজে দীর্ঘ ২০ বছর পর তিনি দেশে (বাংলাদেশ) আসেন এবং সুবিধাজনক সময় পর্যন্ত অবস্থান করেন। কিন্ত গ্রামের চাঁদাবাজদের কারণে জন্মভূমিতে ফিরেও নিজ বাড়িতে না থেকে তিনি সিলেট শহরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
    তিনি চাঁদা না দেওয়ায় অলংকারী ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল, মিরগাঁও গ্রামের মুহিবুর রহমান আক্তার, শায়েস্তা মিয়া (সাবেক ইউপি সদস্য), ফারুক, মুতলিব, আকজ্জুল ও লিলু মিয়া তাকে হুমকি দেন এবং তিনি আইনের আশ্রয় নিলেও এব্যাপারে তেমন কার্যত প্রদক্ষেপ গ্রহন করছে না প্রশাসন।
    সর্বশেষ ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে তিনি দেশে এসে তার বোন ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করতে গ্রামের বাড়িতে গেলে উল্লেখিত লোকজন তার কাছে ১০লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানালে তারা (অভিযুক্তরা) গ্রামবাসীর কাছে আব্দুন নুরের বিরুদ্ধে ‘মসজিদে তালা ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটুক্তি’ করেছেন বলে অপপ্রচার করে বিভ্রান্ত শুরু করে। এর প্রতিবাদে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন আব্দুল নূর। বিষয়টি মিমাংসার জন্য তাকে (আব্দুন নূর) ১০ লাখ টাকা প্রদানের জন্য প্রস্তাব করেন ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল। কিন্তু আব্দুল নূর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এরপর থেকে নাজমুল ইসলাম রুহেল বিভিন্ন সভা সমাবেশে শায়েস্তা-ফারুক গংদেরকে ভাল মানুষের স্বীকৃতি দিয়ে তার (আব্দুন নুর) বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করে আসছেন এবং চাঁদাবাজদেরকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এছাড়া আব্দুন নুরের বিরুদ্ধে যে সময়ে মসজিদে তালা লাগানোর অভিযোগ করা হয়েছে ওই সময়ে তিনি (আব্দুন নুর) সিলেটের বাহিরে অবস্থান করছিলেন এর প্রমাণ রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
    লিখিত অভিযোগে আব্দুন নুর আরো উল্লেখ করেন, সম্প্রতি তিনি দক্ষিণসুরমা উপজেলার কামালবাজারের তালিবপুর এলাকায় নিজের ক্রয় করা জমিতে একটি ৫তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করলে শায়েস্তা-ফারুক গংরা তার (আব্দুন নুর) কাছে ১কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি (আব্দুন নুর) চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমতাবস্থায় গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে ওই নির্মানাধিন ভবন থেকে ৩ শ্রমিক নিখোঁজ হন। পরদিন শায়েস্তা মিয়াসহ ৯জনকে আসামী করে অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেন আব্দুন নুর। ওই দিন রাতে দিক্ষণ সুরমা কলেজ এলাকা থেকে নিখোঁজ ৩জনকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত ২জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
    নিজেকে একজন নিয়মিত নামাজ আদায়কারী ঈমানদার মুসলমান দাবি করে আব্দুন নুর বলেন, ‘আমি গার্ডেন টাওয়ারে থাকি, অথচ তারা (শায়েস্তা-ফারুক) ছড়াচ্ছে আমি আমার গ্রামের মসজিদে তালা মেরে দিয়েছি এবং নবী করিম (সা.) কে নিয়ে নাকি কটুক্তি করেছি বলে সর্বত্র ছড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়া তারা আমাকে নাস্তিক হিসেবে অপবাদ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ভাড়াটে লোক নিয়ে মানববন্ধন করেছে।
    এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আমি আমার নিজস্ব জায়গায় গ্রামের মসজিদ ও এলাকার হতদরিদ্র লোকদের পাকা গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছি এবং গরীব অসহায় পরিবারের মেয়ের বিয়েতে ও চিকিৎসার জন্য অর্থ অনুদান প্রদান করেছি। প্রবাসে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে দেশে আমি যে জায়গা জমি ক্রয় করেছিলাম ও উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলাম তা আজ এই চাঁদাবাজদের কারণে ভোগ করতে পারছি না। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে আজ নিজের জন্মভূমিতে এসে এই দুস্কৃতিকারীদের খপ্পরে পড়ে পদে পদে আমি হয়রানী হচ্ছি। এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।
    এদিকে, আব্দুন নুরের বিরুদ্ধে মসজিদে তালা দেওয়া ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটুক্তির ভিত্তিহীণ অভিযোগ করে তাকে নাস্তিক আখ্যায়িত করার ৫৭ ধারায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গত ২৬ জুন সিলেট পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন আব্দুন নুর। এতে ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল, স্থানীয় ইউপি সদস্য রিয়াজ আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য সায়েস্তা মিয়াসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
    এ ব্যাপারে অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল তাঁর বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, আব্দুন নূর একজন বাটপার, মামলাবাজ মানুষ। তাঁর হয়রানীতে অতিষ্ট নিজ গ্রামের মানুষ। সে খারাপ মানুষ হিসেবে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে সে প্রমাণগুলো প্রশাসনসহ গ্রামের মানুষের কাছে রয়েছে।



সর্বশেষ খবর


নিউজ খুঁজুন
আর্কাইভ
ফেইসবুক পেইজ