বিশ্বনাথ বিডি ২৪ || 06 August, 2022, 7:52 PM || সিলেট
ওসমানীনগর(সিলেট) প্রতিনিধি ::- সিলেটের ওসমানীনগরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১৯ বছরের এক তরুণীকে গনধর্ষণ করা হয়েছে। নির্যাতিত তরুণী গত শুক্রবার রাতে ওসমানীনগর থানায় গণধর্ষণের অভিযোগে (মামলা নং-৪) দায়ের করলে রাতেই ঘটনার সাথে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারহওয়া অভিযুক্তক্তরা হলেন ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের সিকন্দরপুর মাইজগাঁওয়ের মৃত আহাদ মিয়ার ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩২), একই গ্রামের মৃত তছর মিয়া চৌধুরীর ছেলে সাইফুর রহমান চৌধুরী রানা ও উপজেলার পূর্ব ব্রাহ্মণ গ্রামের মো. আকলু হোসেন লুদু মিয়ার ছেলে মো. কামাল হোসেন (৩৪)।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর এলাকার ১৯ বছর বয়সী এক যুবতী গত এক বছর পূর্বে নবীগঞ্জের আউশকান্দিতে তার এক আত্বীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে। আত্বীয়ের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে নবীগঞ্জের আউমকান্দি এলাকার রুবেল নামক একজনের সাথে তার পরিচয় হয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। রুবেল তার সাথে বিবাহ বহির্ভুত শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
গত ৩ আগস্ট রুবেল তার ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে ওই তরুণীর মোবাইলে কল দিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে তাকে ওসমানীনগর থানার সিকন্দরপুর গ্রামে যেতে বলে। বাসে গোয়ালাবাজার নেমে সিকন্দরপুর গ্রামে অটোরিকশায় পৌঁছানোর পর তাকে রুবেল রিসিভ করবে একথাই ফোনে চূড়ান্ত হয়। তরুণী কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে সেদিন বিকেল ৩টায় গোয়ালাবাজার পৌঁছান। সাড়ে তিনটার দিকে সিকন্দরপুর গ্রামে পৌঁছালে রুবেল তাকে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে তোলে। সেখানেই বিয়ের হওয়ার কথা।
কিন্তু কিছুক্ষণ পরই রানা ও করিম নামে দু’জনকে নিয়ে রুবেল তরুণীর হাত পা বেঁধে তাকে ধর্ষণ করতে শুরু করে। ওই ঘরে আটকে রেখে পালাক্রমে রাতভর তার উপর পাশবিক নির্যাতন চলে। তাদের বাঁধা দিতে গেলে তরুণীকে তারা হত্যার হুমকি দিতে থাকে। ফজরের আজানের পর আসামীরা তার বাঁধন খুলে দেয়। এরপর তারা তিনজন তাদের বন্ধু জাহাঙ্গীর ও কামালকে ডেকে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে বলে। কামাল ও জাহাঙ্গীর তাকে মারধোর করে কানের দোলসহ মোবাইল এবং নগদ পাঁচ হাজার টাকা রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে তরুনী একটা টমটমে বেগমপুর নেমে কান্নাকাটি করতে থাকলে আনোয়ার আলী ও আব্দুর রহিম নামক দুই পথচারী তাকে দেখে ঘটনার এবং বিস্তারিত শুনে থানায় নিয়ে যান।
নির্যাতিতা তরুণীর অভিযোগ, আসামী রুবেল, রানা ও করিম পরস্পর সহযোগীতায় তাকে বসত ঘরে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। আর জাহাঙ্গীর ও কামাল তাদের সহযোগীতা করে। তারা তার বিশ হাজার টাকা দামের মোবাইল সেট, নগদ ৫ হাজার টাকা এবং বিশ হাজার টাকা দামের স্বর্ণের কানের দোলও কেড়ে নিয়েছে বলে তার অভিযোগ।
ওসমানীনগর থানা পুলিশ অভিযোগ পাবার পরপরই পুলিশ অভিযানে নামে এবং এক ধর্ষক ও দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে। নির্যাতিতা তরুণী বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসিতে) চিকিৎসাধীন রয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামীকেও গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।
ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম মাঈনউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতসহ ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার এজাহারনামীয় অন্য আসােিদর গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।